Students

  Teachers

  Staffs

 

সিভাসু ও বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট-এর যৌথপ্রচেষ্টায় নভেল করোনাভাইরাস এর পূর্ণাঙ্গ জিনোম বিন্যাস উন্মোচন





চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) এবং বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরআই)-এর বিজ্ঞানীদের যৌথ প্রচেষ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগে ১ম সর্বোচ্চ ৭টি নভেল করোনাভাইরাসের জিনোম বিন্যাস উন্মোচিত হ’ল। এইকর্মকান্ডে আরো সহযোগিতায় ছিলেন- বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ডইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি), চট্টগ্রামের সংশ্লিষ্ট গবেষকবৃন্দ।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর বিগত ২৫ মার্চ বিআইটিআইডি এবং ২৫ এপ্রিল সিভাসু করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ কার্যক্রম শুরু করে। পরবর্তীতে সিভাসু’র মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ-এর একান্ত আগ্রহ ও পৃষ্ঠপোষকতায় ৩টি প্রতিষ্ঠানের গবেষকবৃন্দ দুই সপ্তাহ যাবৎ অত্যাধুনিক নেক্সট জেনারেশন সিকোয়েন্সিং (এন.জি.এস) পদ্ধতিতে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণাগারে এই তথ্য বিন্যাস উদ্ধারে সফলতা লাভ করেন।

গবেষক দলের সদস্যরা হলেন- সিভাসু’র প্যাথলজি এন্ড প্যারাসাইটোলজি বিভাগের প্রফেসরড. জুনায়েদ ছিদ্দিকী, মাইক্রোবায়োলজি এন্ড ভেটেরিনারি পাবলিক হেলথ বিভাগের প্রফেসরড. পরিতোষ কুমার বিশ্বস, ডা: ইফতেখার আহমেদ রানা, ডা: সিরাজুল ইসলাম,বিআইটিআইডি-এর পরিচালক প্রফেসর ডা: এম.এ. হাসান চৌধুরী, প্রফেসর ডা: শাকিলআহমেদ এবং বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের ড. মো: শহীদুল ইসলাম, সাব্বির হোসেন প্রমুখ।

গবেষকবৃন্দ বিআইটিআইডি’র ল্যাবে প্রাপ্ত নমুনাসমূহ সংগ্রহ পূর্বক বিভিন্নজেলার ১২টি নমুনা ঢাকাস্থ বিজেআরআই-এর জিনোম সিকোয়েন্স ল্যাবে প্রেরণ করেন। এইপদ্ধতিতে ইলুমিনা নেক্সটসেক প্লাটফর্মে প্রায় ২৩ গিগাবাইট জিনোম ডেটা সংগৃহীত হয়। পরবর্তীতে বায়োইনফরমেটিক্স এনালাইসিস এর মাধ্যমে মানব কোষের আরএনএ এবং করোনাভাইরাসের আরএনএ পৃথক করা হয়। এরপর সবগুলো সিকোয়েন্সকে জিনোম এসেম্বলী সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিশ্লেষণপূর্বক নভেল করোনাভাইরাসের জিনোম বিন্যাস উদঘাটন করা হয়।

চট্টগ্রাম এবং পাশ্ববর্তী জেলাসমূহে বিভিন্ন করোনা পজেটিভ রোগী কোন ধরনের ভাইরাসে সংক্রমিত হচ্ছে তা এই গবেষণার ফলে ১ম বারের মত জানা সম্ভব হবে। অধিকতর তথ্য উদঘাটনের জন্য সিভাসু আরো ২০টি নমুনা বিজেআরআই-তে প্রেরণ করেছে, যা এক সপ্তাহের মধ্যে আন্তর্জাতিক ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটাবেজে জমা দেয়া হবে।

গবেষক দলের প্রধান সমন্বয়ক সিভাসু’র মাননীয় উপাচার্য এই সফলতার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান। তিনি উল্লেখ করেন সরকারের বিভিন্ন মহল বিশেষত স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও কৃষি মন্ত্রণালয়-এর সার্বিক সহযোগিতায় এই গবেষণা সফল হয়েছে - যা ভবিষ্যতে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে সরকারের সদিচ্ছা ও সক্ষমতার প্রমাণ দেয়।

জিনোম বিন্যাস উদঘাটনের ফলে নিম্নোল্লিখিত গবেষণাসমূহ সম্ভবপর হবে -

(ক) কোন জেলায় কোন ধরনের ভাইরাস বিস্তার লাভ করেছে;
(খ) বর্তমানে কোন প্রজাতির ভাইরাস বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে এবং তার স্বরূপ, প্রকৃতি ও উৎপত্তিস্থল কোথায়;
(গ) সময়ের সাথে সাথে ভাইরাসের আনবিক গঠনের বিস্তারিত পরিবর্তন ও তার প্রভাব;
(ঘ) ভবিষ্যত টীকা উৎপাদনে কোন প্রজাতির করোনা ভাইরাস বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য হবে;
(ঙ) ভাইরাসের পুনর্গঠন বা পরিবর্তনজনিত নতুন প্রজাতির উদ্ভবের সম্ভাবনা ওপ্রভাব। এছাড়াও এই জিনোম বিন্যাস আন্তর্জাতিক গবেষণা পরিমন্ডলে বাংলাদেশের গবেষকদের উদ্ভাবন ও দক্ষতা প্রমাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।