Students

  Teachers

  Staffs

 

দেশেই হবে শোখিন পাখির লিংগ নির্ধারণ





এখন শহর ও গ্রামের অনেকেই শৌখিন পাখি পুষতে ভালোবাসেন। কিন্তু প্রকৃতিগতভাবে একই বৈশিষ্ট্য ধারণ করে বলে এসব পাখির লিঙ্গ নির্ধারণ করা যায় না। তাই পাখি ব্যবসায়ীদের লিঙ্গ নির্ধারণ করতে পাখির নমুনা পাঠাতে হতো ভারত কিংবা থাইল্যান্ডে। এতে সময় লাগত অনেক দিন, খরচও পড়ত বেশি। তবে এখন থেকে দুই দিনেই দেশে করা যাবে পাখির লিঙ্গ নির্ধারণ। ছয় মাসের প্রচেষ্টায় শৌখিন পাখির লিঙ্গ নির্ধারণে সক্ষমতা অর্জন করেছেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) একদল গবেষক। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অর্থায়নে ‘অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে শৌখিন পাখির ডিএনএ সেক্সিং’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এই গবেষণা করেন তাঁরা। শৌখিন পাখির লিঙ্গ নির্ধারণে সক্ষমতা অর্জন বাংলাদেশে এটিই প্রথম।

গবেষণা।

চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে গবেষণা শুরু করে সিভাসুর এই দল। প্যাথলজি ও প্যারাসাইটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শুভাগত দাসের তত্ত্বাবধানে বিভাগের শিক্ষক এম এ আলিম, তোফাজ্জল মো. রাকিব এবং এম এস গবেষক ত্রিদীপ দাশ ও মো. সাদ্দাম হোসেন এ গবেষণা কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন।
>পাখির লিঙ্গ নির্ধারণ করতে নমুনা পাঠাতে হয় ভারত কিংবা থাইল্যান্ডে। সময় ও খরচ—দুটোই বেশি লাগে

গবেষকেরা গালা, লরিকেট, সান কুনুর ও কাকাতুয়া—এই চার প্রজাতির শৌখিন পাখির রক্ত ও বুকের পালক থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেন। পরে আধুনিক মলিকুলার প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পাখির লিঙ্গ নির্ধারণে সক্ষমতা অর্জন করেন তাঁরা।

দুদিনে লিঙ্গ নির্ধারণ

আগে ভারত কিংবা থাইল্যান্ডে পাখির পালকের নমুনা কুরিয়ারে করে পাঠাতেন ব্যবসায়ীরা। এতে ফলাফল পেতে কমপক্ষে দুই সপ্তাহ সময় লাগত। খরচ পড়ত সর্বনিম্ন ১ হাজার ২০০ টাকা। তবে এখন মাত্র দুই দিনেই জানা যাবে শৌখিন পাখির লিঙ্গ কী। এতে খরচ পড়বে ৬০০ টাকা। আগ্রহীদের পাখির রক্ত ও বুকের পালকের নমুনা এবং একটি ফরমে পাখির সব তথ্য লিখে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠাতে হবে। ল্যাবরেটরিতে লিঙ্গ নির্ধারণ করা হবে। সঙ্গে দেওয়া হবে লিঙ্গ নির্ধারণসংক্রান্ত একটি সনদও।

অত্যাধুনিক এই প্রযুক্তি পাখির জন্য ঝুঁকিমুক্ত বলে জানিয়েছেন গবেষক দলের প্রধান শুভাগত দাস। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা কেমিক্যালসহ নানা খরচের জন্য ৬০০ টাকা করে নিচ্ছি। ধীরে ধীরে সময় ও খরচ আরও কমে আসবে।

সিভাসুর উপাচার্য গৌতম বুদ্ধ দাশ প্রথম আলোকে বলেন, দেশে ডিএনএ সেক্সিং প্রযুক্তি উদ্ভাবনে সক্ষমতা এটাই প্রথম।

চিটাগং বার্ড ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জিয়া উদ্দিন বলেন, বেশির ভাগ শৌখিন পাখির ক্ষেত্রে দেড় থেকে দু বছরের আগে জানা যায় না, কোনটি কোন লিঙ্গের। তাই শৌখিন পাখি বিক্রি করতে নানা ভোগান্তিতে পড়তে হতো। এ জন্য লিঙ্গ নির্ধারণ করতে ভারত কিংবা থাইল্যান্ডে পাখির নমুনা পাঠাতে হতো। এতে খরচ ও সময় বেশি লাগে। এখন সেটি হবে না।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৮