প্রবন্ধ


চেতনায় বঙ্গবন্ধু, অস্তিত্বে বাংলাদেশ
অন্তর সরকার
৪র্থ বর্ষ, মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ
ভূমিকা
সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতার মহান মন্ত্রের উচ্চারণে বিশ্ব মানচিত্রে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিল, যে অধ্যায়ের নাম বাংলাদেশ। এই অধ্যায় লেখা হয়েছে ৯ মাসব্যাপী অকুতোভয় বীরের রক্ত কালিতে, আমাদের ভাই হারানো ব্যাথা আর মা বোনের অমূল্য সম্ভ্রমের মূল্যে। যে অধ্যায়ের রচয়িতা একজন অদ্বিতীয় জনমানুষের কবি, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আজ বিজয়ের স্বাদ পেয়েছি আমরা যাঁর ২৩ বছরের সংগ্রামে। ৪৭ এর দেশভাগ থেকে ৫২ এর শহীদের রক্তখচিত বর্ণমালা, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান থেকে ৭১ এর প্রলয়ংকারী মুক্তির সংগ্রাম, ডিসেম্বরের বিজয়, একজন বঙ্গবন্ধু ও একটি বাংলাদেশ। দীর্ঘদিনের সংগ্রাম, ত্যাগ-তিতিক্ষায় বাঙালি জাতির দীর্ঘ ২৫ বছরের শোষণ-নিপীড়ন থেকে চিরদিনের জন্য মুক্তি, একটি স্বাধীন দেশ, লাল-সবুজ পতাকা, একটি সংবিধান ও একটি অনন্য অস্তিত্ব। আজও বাংলাদেশের প্রতিটা ধূলিকণায় ৩০ লক্ষ শহীদের রক্ত লেগে আছে, জলধারায় এখনো বয়ে চলেছে একাত্তরের কান্না। আজ আমরা স্বাধীন, স্বনির্ভর, আমাদের আছে গৌরবের ইতিহাস, আমাদের আছে বাঙালি সত্ত্বা, সংস্কৃতি আর ঐতিহ্য। আমাদের চেতনায় বেঁচে আছে বঙ্গবন্ধু আর আমাদের অস্তিত্ব জুড়ে আছে বাংলাদেশ।

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ
‘মুজিব মানেই বাংলাদেশ, আমার লাল-সবুজ পতাকা
মুজিব মানেই মুক্তি, মুজিব মানেই স্বাধীনতা

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ, একটি অপরটির পরিপূরক, পরস্পর একাত্ম, এক সুতোয় বাঁধা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেই সাধক যিনি তাঁর দীর্ঘ কন্টকাকীর্ণ সাধনায় সমগ্র বাঙালি জাতির মনে সঞ্চার করেছিলেন স্বাধীনতার বাসনা। একটি বদ্বীপের জাতীয়তাবাদের চেতনা তুলে ধরা, একটি ঘুমন্ত জাতিকে তাদের অধিকার নিয়ে সোচ্চার করা, তাদের সকল শোষণ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে শেখানো স্বাধীনতার একজন অনন্য স্থপতি তিনি। বাঙালি জানে, সারা বিশ্ব জানে, বাংলাদেশ সৃষ্টির মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি আলাদা কোন স্বত্তা নন, বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ আর বাংলাদেশ মানেই বঙ্গবন্ধু, এই কথা অনস্বীকার্য।তাঁর যাত্রা শুরু ‘বঙ্গবন্ধু’ হিসেবে নয়। ক্রান্তিলগ্নে এই ভূখণ্ডের কোটি জনগণের চূড়ান্ত সংগ্রামের পথপ্রদর্শক হয়েই বঙ্গবন্ধু উপাধি তিনি অর্জন করেছেন । এই পরিচয় কর্মে, ত্যাগে, সংগ্রামে, সাধনায়, নেতৃত্বে তাঁর জন্মসূত্রে পাওয়া নামকেও ছাপিয়ে যায়। ‘বঙ্গবন্ধু’ নামের প্রচারে কিংবা ক্ষমতাকেন্দ্রের দাপট কিন্তু তাঁর মহিমা বাড়ায় না। বরং তাঁর কর্ম ও আদর্শ অনুসরণেই তাঁর অনন্য বিকাশ স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
হ্যামিলনের বংশীবাদকের মতো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সমগ্র জাতিকে একসূত্রে গ্রথিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন রাজনীতির কবি। রাজনীতির কবির মতো সৃষ্টিশীল চেতনা দিয়ে একটি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছেন আজীবন। শেখ মুজিব যখনই দেখেছেন বাংলার এই ভূখন্ড শাসক ও শোষকগণের কাছে শুধুই শোষণ, বঞ্চনা ও নিষ্পেষণের এবং যখনই দেখেছেন বাংলার ঐতিহ্য, ভাষা ও সংস্কৃতি দলিত হচ্ছে শোষকচক্রের কাছে, তখনই তিনি প্রতিবাদ করেছেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে, আওয়াজ তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁর মূল্যবোধের জায়গা থেকে। তাঁর সিদ্ধান্ত, অবিচলতা নিয়ে বলতে গিয়ে কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল ক্যাস্ট্রো বলেছিলেন-

‘আমি হিমালয় দেখিনি, কিন্তু শেখ মুজিবকে দেখেছি।ব্যক্তিত্ব ও সাহসিকতায় তিনি হিমালয়ের মতো’।

৭ই মার্চের অগ্নিগর্ভ ভাষণে তিনি আবির্ভূত হয়েছিলেন জনতার কণ্ঠস্বরে। পৃথিবীতে কোন ব্যক্তির একক স্বাধীনতার ঘোষণা এতটা আলোড়ন তুলতে পারেনি যা পেরেছিলো বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা। এই ঘোষণা কোটি মানুষকে মরণপণ সংগ্রামের প্রেরণা জুগিয়েছিলো যা অজেয় শক্তি হয়ে আমাদের জন্য ছিনিয়ে নিয়ে এসেছে স্বাধীনতাকে। পেট্রিক হেনরির 'Give me liberty, or give me death' (1775), আব্রাহাম লিঙ্কনের 'Gettysburg Address' (1863), উইনস্টন চার্চিলের 'We shall fight on the beaches' (1940), কিংবা মার্টিন লুথার কিংয়ের 'I have a Dream' (1963) ভাষণ মানুষকে জাগ্রত করেছে, কিন্তু জাতিরাষ্ট্র সৃষ্টি করেনি। পক্ষান্তরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবু ররহমানের ভাষণ ছিল স্বাধীনতার ডাক, মুক্তির আহ্বান- একটি স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র গঠনের ঘোষণা।

বঙ্গবন্ধুর টানা ২৩ বছরের লালিত স্বপ্ন ও অসাধারণ নেতৃত্বে পরিচালিত জনযুদ্ধের রক্তিম ফসল এই বাংলাদেশ। শোষণ, নিপীড়ন, বঞ্চনা আর শত বছরের পরাধীনতার শিকল দুমড়ে-মুচড়ে যে লৌহমানব দেখিয়েছিলেন মুক্তির পথ, দিয়েছিলেন পথহারা জাতিকে পথের দিশা, অমিত তেজে ঘোষণা করেছিলেন স্বাধীনতার মূলমন্ত্র, ছড়িয়ে দিয়েছিলেন সাড়ে সাত কোটি মানুষের হৃদয়ে মুক্তিরবার্তা, তিনি বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালি জাতি ও সমগ্র বিশ্বের কাছে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের প্রাণপুরুষ। কালজয়ী এ মহাপুরুষের প্রতিটি পদক্ষেপ পথের সন্ধান দিয়েছে আমাদের, প্রতিটি নির্দেশনা অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে বাঙালি জাতিকে, দিয়েছে নতুন পথের দিশা। বাংলাদেশের মুক্তি আন্দোলনে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে জাতির পিতার নাম চিরদিন স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তাইতো কবি অন্নদাশংকর রায় বলেছেন-

`যতকাল রবে পদ্মা যমুনা গৌরি মেঘনা বহমান, ততকাল রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান`

বঙ্গবন্ধুর কর্ম, ত্যাগ ও দেশপ্রেম বাংলাদেশের ইতিহাসের সকল রাষ্ট্রীয় সংগ্রাম, অধিকার আদায়ের আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলাদেশের স্বাধীনতায় আমরা দেখতে পাই বঙ্গবন্ধুর কর্ম, ত্যাগ ও দেশপ্রেম। বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের প্রধান শক্তির উৎস ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বায়ান্নর বর্ণমালার সংগ্রাম, চুয়ান্নর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, আটান্নর সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, বাষট্টির শিক্ষা-আন্দোলন, ছেষট্টির ছয় দফা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ সবটা জুড়ে আছে তাঁর আদর্শ, নীতি ও নেতৃত্বের ছাপ। গণতান্ত্রিক অধিকারের পক্ষে কিশোর বয়স থেকেই তিনি ছিলেন সর্বদা বজ্রকণ্ঠ। গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র থাকাকালে তৎকালীন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যোগদানের কারণে প্রথমবারের মতো কারাবরণ করেন শেখ মুজিব। ম্যাট্রিকুলেশন পাসের পর কলকাতায় ইসলামিয়া কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকসহ তৎকালীন প্রথম সারির রাজনৈতিক নেতাদের সান্নিধ্যে আসেন।

১৯৪৪ সালে কুষ্টিয়ায় নিখিল বঙ্গ মুসলিম ছাত্রলীগের সম্মেলনে শেখ মুজিব বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। কলকাতায় বসবাসকারী ফরিদপুরবাসীদের নিয়ে গঠিত ‘ফরিদপুর ডিস্ট্রিক্ট এসোসিয়েশন’ এর সেক্রেটারি মনোনীত হন তিনি। এর দুই বছর পর ইসলামিয়া কলেজ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পদক নির্বাচিত হন। ১৯৪৭ সালেই তিনি বপন করে গিয়েছেন মাতৃভাষার অধিকার আদায়ের লড়াইয়ের বীজ। তৎকালীন ‘পূর্ব পাকিস্তান গণতান্ত্রিক যুবলীগ’ সংগঠনের সম্মেলনে ছাত্রনেতা শেখ মুজিবুর বলেছিলেন, ‘বাংলা ভাষাকে পূর্ব পাকিস্তানের লেখার বাহন ও আইন আদালতের ভাষা করা হউক। সমগ্র পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা কী হইবে তৎসম্পর্কে আলাপ-আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভার জনসাধারণের ওপর ছাড়িয়া দেওয়া হউক এবং জনগণের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলিয়া গৃহীত হউক’। তিনিই প্রথম নিজের মাতৃভাষায় বিনা খরচে বাধ্যতামূলক প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা পাওয়ার মৌলিক অধিকারের দাবি এবং জাতীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তন করার দাবি তুলে ধরেন। ১৯৫০ এরমন্বন্তরের সময় তৎকালীন গণসরবরাহমন্ত্রী শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ঘনিষ্ঠ সাহচর্যে শেখ মুজিব পথে নেমেছিলেন ত্রাণ বিতরণ করে অসহায় মানব-মানবীর মৃত্যুতাড়িত মুখে হাসি ফোটাবার সংকল্পে।

১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ এর যুগ্ম সম্পাদক হন কারাবন্দি শেখ মুজিব যা ১৯৫৫ সালের বার্ষিক কাউন্সিল অধিবেশনে এর সাম্প্রদায়িক পরিচয় মুছে দিয়ে ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ’ নামে পরিচিত হয়। মওলানা ভাসানী সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৫৩ সালে গণচীন সফরে যেয়ে তিনি সেখানে রাষ্ট্রকে মানুষের কল্যাণে নিবেদিত দেখে লিখে ছিলেন: ‘আমি নিজে কমিউনিস্ট নই। তবে সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস করি এবং পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে বিশ্বাস করি না। একে আমি শোষণের যন্ত্র হিসাবে মনে করি। এই পুঁজি পতি সৃষ্টির অর্থনীতি যত দিন দুনিয়ায় থাকবে ততদিন দুনিয়ার মানুষের উপর থেকে শোষণ বন্ধ হতে পারে না। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে বিশেষ অবদান রাখেন শেখ মুজিব। ১৯৫৭-তে মওলানা ভাসানী আওয়ামী লীগ ছেড়ে যাওয়ার পরে হোসেন সোহরাওয়ার্দী হন সভাপতি, শেখ মুজিব থেকে যান সাধারণ সম্পাদক।

১৯৫৮ সালের সেনাশাসন, স্বৈরাচারের প্রতিবাদী কন্ঠস্বর ছিলেন শেখ মুজিব। শেখ মুজিব সামরিক বাহিনীর প্রতিনিধিত্বের বিরোধিতা করে একটি সিদ্ধান্ত প্রস্তাব গ্রহণ করেছিলেন যার খেসারত দিতে ওই বছরের ১১ অক্টোবর নিবর্তনমূলক আদেশে তাঁকে আটক করে একের পর এক মিথ্যা মামলা চাপিয়ে বন্দি রাখার চেষ্টা চলে এবং শেষ পর্যন্ত ১৯৬০-এর শেষে হাইকোর্টে রিট আবেদন করে তিনি মুক্তি পান। ১৯৬২-র ফেব্রুয়ারিতে জননিরাপত্তা আইনে তিনি গ্রেফতার হন। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খানের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ১৯৬২ সালে শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলনসহ বিভিন্ন জনদাবি আদায়ের আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন শেখ মুজিব। ১৯৬৫ তে আইয়ুব খানের সাজানো নির্বাচনে যাতে কোন প্রতিকূলতা না আসে সেজন্য রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ এনে শেখ মুজিবকে এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় তবে হাইকোর্টের নির্দেশে তিনি ছাড়াপান। ১৯৬৩-র ডিসেম্বরে সোহরাওয়ার্দীর জীবনাবসানের পর দলের অবিসংবাদী নেতা হয়ে ওঠেন শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে বাঙালি জাতির ম্যাগনাকার্টা, মুক্তির সনদ নামে অভিহিত ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন তিনি যা ছিলো সব রাজনৈতিক কর্মতৎপরতার কেন্দ্রবিন্দু এবং স্বাধীনতা আন্দোলনের মূল ভিত্তি। ১৯৬৬ এর ১ মার্চ তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং ৬ দফা দাবির পক্ষে জনমত গড়ে তোলার লক্ষ্যে এই বাংলায় গণসংযোগ সফর শুরু করেন।

১৯৬৮ এর কুখ্যাত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয় কিন্তু ১৯৬৯ সালে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এর গণআন্দোলনের মুখে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার এই মামলা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়। ৬ দফাসহ ছাত্রদের ১১ দফা দাবি আদায়ে ও শেখ মুজিবের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে গণআন্দোলন চলতে থাকে। গণআন্দোলন একরকম গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। শেষ পর্যন্ত আন্দোলনের চাপে মুক্তি পান শেখ মুজিবুর রহমান। ওই বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি রেসকোর্সের গণসংবর্ধনায় সর্বদলীয় ছাত্র-সংগ্রাম পরিষদ তাকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করে। লাখো জনতার করতালি ও মুহুর্মুহু স্লোগান বাংলার মাটিতে বঙ্গবন্ধু নামের অনন্য অস্তিত্বকে বরণ করে নেয় সেদিন। গণসংবর্ধনা সভায় বঙ্গবন্ধু তাকে সামরিক হেফাজতে প্রেরণের ঘটনা বর্ণনা করে বলেন- ‘এক মুহূর্ত সময় চাই। এই মুহূর্তে কারাগারের সামনের রাস্তা হইতে এক মুঠি মাটি লইয়া কপালে লাগাইয়া খোদার কাছে আকুতি জানাইলাম, এই দেশেতে জন্ম আমার, যেন এই দেশেতেই মরি’।

বাংলাদেশ নামটির প্রবক্তাও বঙ্গবন্ধু নিজেই। ১৯৬৯ এর ৫ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় তিনি পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলকে ‘বাংলাদেশ’ নামে পরিচিত করার আহ্বান জানান। ১৯৭০ এ বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের সভাপতি হন সাথে তাজউদ্দীন আহমদ হন সাধারণ সম্পাদক। ফাঁসির মঞ্চ থেকে বেঁচে আসা মুজিবের জনপ্রিয়তা তখন তুঙ্গে। ফলে নির্বাচন দিতে বাধ্য হলেন ইয়াহিয়া খান। ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে বরাদ্দ ১৬৯টি আসনের মধ্যে ১৬৭টিই জিতে সাধারণ পরিষদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতায় সরকার গঠনের অধিকার পান তিনি। ৬ দফার ভিত্তিতে শাসনতন্ত্র রচনায় অঙ্গীকারবদ্ধ হলেও পাকিস্তানের দখলদার শক্তি তা সফল হতে দেয় না। ১৯৭০ সালে রাষ্ট্র পরিচালনায় সংবিধানের বিশেষ গুরুত্ব তিনি গভীরভাবে অনুধাবন করেছিলেন এবং বলেছিলেন- ‘শাসনতন্ত্র ছাড়া কোন দেশ-এর অর্থ হল মাঝিবিহীন নৌকা, হালবিহীন নৌকা, শাসনতন্ত্রে মানুষের অধিকার থাকবে, শাসনতন্ত্রে মানুষের অধিকারের সঙ্গে সঙ্গে কর্তব্যও থাকবে’।

জেল, জুলুম, অত্যাচার কিছুই তাকে বাঙালির মুক্তির স্বপ্নযাত্রা থেকে বিরত রাখতে পারেনি। সামরিকআইন, সান্ধ্যআইন, জেল-জুলুম-অত্যাচার, নির্যাতনের মুখে কোন দিন তিনি আত্মগোপন করেননি। পাকিস্তানের ২৩ বছরে যৌবনের একযুগের বেশি তিনি জেলে কাটিয়েছেন, কারাগার ছিল তাঁর দ্বিতীয় বাড়ি। তাঁর জেলখানা থেকে প্রকাশিত একটি গ্রন্থে দেখা যায়, ৩০৫৩ দিন তিনি জেলখানায় অতিবাহিত করেছেন। সেই যে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ ভাষা আন্দোলনকালে গ্রেফতার হয়েছিলেন, তারপর থেকে জেলখানাই হয়ে উঠেছিল তাঁর নিত্য আবাসস্থল। ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’ এই দুটি অসাধারণ গ্রন্থে তাঁর সংগ্রামী জীবণের পরিচয় শিহরিত করে সর্বস্তরের মানুষকে। তাঁর ইচ্ছা ছিল বাঙালি জাতিকে পরাধীনতামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ একটি অস্তিত্ব বা জীবন প্রদান করতে, যে-জীবন হবে ক্ষুধামুক্ত, স্বাস্থ্য-শিক্ষা ও সংস্কৃতিসম্পন্ন। এ ঐকান্তিক ইচ্ছা বা আকুলতা তাঁর‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র পাতায় পাতায় বারবার ফুটে উঠেছে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন দীর্ঘ ৯ মাস তিনি পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি ছিলেন আর প্রতিনিয়ত মৃত্যুর মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করেছেন স্বাধীনতা অর্জনের সর্বস্ব পণ নিয়ে। নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ এর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় আসে। এরপর পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পান বঙ্গবন্ধু। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করে তিনি বাঁধ ভাঙা আবেগে অশ্রসিক্ত নয়নে বলেন-

আমার সেলের পাশে আমার জন্য কবর খোঁড়া হয়েছিল। আমি প্রস্তুত হয়েছিলাম, বলেছিলাম আমি বাঙালি আমি মানুষ, আমি মুসলমান একবার মরে দুইবার মরে না। আমি বলেছিলাম আমার মৃত্যু আসে যদি হাসতে হাসতে যাবো আমার বাঙালি জাতকে অপমান করে যাবোনা, তোমাদের কাছে ক্ষমা চাইবো না এবং যাবার সময় বলে যাবো জয়বাংলা, স্বাধীন বাংলা, বাঙালি আমার জাতি, বাংলা আমার ভাষা, বাংলার মাটি আমার স্থান।

স্বাধীনতা পরবর্তীকালে বঙ্গবন্ধু ও তার অবদান
স্বাধীন দেশে প্রত্যাবর্তন করেও বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশকে গড়ে তুলতে বিরামহীন কাজ করেছেন। দেশের সামাজিক,অর্থনৈতিক ও সামগ্রিক উন্নয়নের নিমিত্তে সূচনা করে গেছেন অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের। মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় খেতাব প্রদানসহ তাঁদের কল্যাণে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন, তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি, ১১ মাসের মধ্যে বাংলাদেশের প্রথম সংবিধান প্রণয়ন, ভারতে আশ্রয় গ্রহণকারী এক কোটি শরণার্থীর পুনর্বাসন, ধ্বংসপ্রাপ্ত ব্রিজ-কালভার্ট-রাস্তাঘাট-রেলপথ মেরামত করে ব্যবহার উপযোগীকরণ, শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নসহ প্রশাসনিক ব্যবস্থার পুনর্গঠন, সব প্রাইমারি স্কুলে বিনা মূল্যে পাঠ্যবই সরবরাহ, ১১ হাজার প্রাইমারি স্কুল প্রতিষ্ঠা, ৪০ হাজার বেসরকারি প্রাইমারি স্কুল সরকারিকরণ, ব্যাংক-বীমাসহ পাকিস্তানিদের পরিত্যক্ত ৫৮০টি শিল্পকারখানা জাতীয়করণ, বন্ধ কলকারখানা চালু করে কর্মহীন মানুষের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাকরণ, রেসকোর্স ময়দানে ঘোড়দৌড়ের নামে জুয়ার বিস্তারসহ ইসলামবিরোধী কার্যকলাপ নিষিদ্ধকরণ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা, এক বছরের মাথায় জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠান, অর্থনৈতিক নীতিমালা ঢেলে সাজিয়ে বৈদেশিক সাহায্যের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে আত্মনির্ভরশীল জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ, দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি গ্রহণের মাধ্যমে দুর্নীতি দমনসহ সব সেক্টরে উৎপাদন বৃদ্ধি, জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা,উপকূলীয় বনায়নের মাধ্যমে সর্ব প্রথম দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস কার্যক্রমের সূচনা, ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণের কাজ এমনকি বহুল আলোচিত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম উদ্যোক্তাও বঙ্গবন্ধু।

১৯৭৩ সালের পূর্বে কৃষিতে স্নাতক শেষে সরকারী চাকুরীতে যোগ দিলে ২য় শ্রেনীতে পদায়ন করা হত। কৃষিবিদদের দাবির প্রেক্ষিতে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৭৩ সালে ১৩ ফেব্রুয়ারী কৃষিবিদদের সরকারি চাকরিতে প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার পদমর্যাদা দান করেন। যুগান্তকারী “কৃষিবিদ ক্লাস ওয়ান” মর্যাদার ফলে আজ কৃষিবিদরা স্ব-মর্যাদায় কাজ করে যেতে পারছেন দেশজুড়ে। এরই প্রেক্ষিতে ২০১০ সালে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) ১৩ ফেব্রুয়ারীকে কৃষিবিদ দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। ২০১১ সাল থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারী কৃষিবিদ দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। একজন আপোসহীন, মাথা নত না করা, নির্ভীক নেতৃত্ত্বের নিদর্শন বঙ্গবন্ধু যার নেতৃত্বে পাকিস্তান পর্ব পেরিয়ে নিজস্ব সংস্কৃতি, ঐতিহ্য নিয়ে বাংলাদেশ নামক ভূখন্ডের সৃষ্টি হয়। কোটি মানুষের মনের এতো বৈচিত্র্য থাকার পরেও তিনি ধারিত হয়েছিলেন সবার মাঝে। তাইতো, স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসেও বাংলাদেশের অণুতে অণুতে মিশে আছে তাঁর কর্ম, ত্যাগ ও দেশপ্রেমের চিহ্ন।

স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে বাংলাদেশ
স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশ নামক ধ্বংসস্তূপ থেকে পৌরাণিক ফিনিক্স পাখির মতো যার নেতৃত্বে জেগে উঠেছিল নতুন দেশ, আরাধ্য সোনার বাংলা গঠনের লক্ষ্যে দ্বিতীয় বিপ্লবের স্বপ্নযাত্রা শুরু করেছিলেন যিনি, ঘাতকের বুলেটে তাঁর মহাপ্রয়াণ ঘটেছে। কিন্তু আমাদের জীবনাচরণে, প্রাত্যহিকতায় চিরকালীন বাতিঘরের মতো তিনি সমুজ্জ্বল। নতুন প্রজন্মের কাছে তিনি প্রতিমুহূর্তে আবির্ভূত হচ্ছেন প্রেরণার দ্বীপশিখা হিসেবে। স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশের যে অভিযাত্রা, সেখানে তিনিই সাহস ও আলোকবর্তিকা। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে পালিত হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মগ্রহণের শততম বছর, মুজিব শতবর্ষ, জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী একটি বিশেষ সময়কালের অর্জন ও গৌরবের সঙ্গে যুক্ত। এই গৌরবের অধ্যায়ে সুগভীর তাৎপর্যের সঙ্গে যোগ হয়েছে উন্নয়ন ও অগ্রগতির অসংখ্য মাইলফলক। বঙ্গবন্ধু একটি সমৃদ্ধ সোনার বাংলার স্বপ্নযাত্রা শুরু করেছিলেন। যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ আজ আর্থসামাজিক উন্নয়নের নানা বৈশ্বিক সূচকে বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে আছে। আজ বাংলাদেশে চরম দারিদ্র্য হ্রাস পেয়েছে, শিশু মৃত্যুর হার কমেছে, মেয়েদের শিক্ষার হার বেড়েছে। করোনাভাইরাসের মতো বিশ্বদুর্যোগের সময়েও প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ঈর্ষণীয়ভাবে। যে বাংলাদেশকে দেখা হতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপন্ন এক দেশ হিসেবে, আজ সেই পরিচয় তাঁর মুছে গিয়ে বাংলাদেশের নাম লেখা পোশাক পৌঁছে যাচ্ছে বিশ্বের সব ধনী দেশে। কর্ম, শ্রমে, সৃজনে, প্রতিভায় জার্মানি, গ্রেট ব্রিটেনসহ ইউরোপের নানা দেশে, যুক্তরাষ্টে, কানাডায়, মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়েছেন এই দেশের নাগরিকেরা।

আজ বাংলাদেশ কৃষিতে কেবলমাত্র স্বনির্ভরই নয়, একটি কৃষি রপ্তানিকারক দেশেও রূপান্তরিত হয়েছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে পাটশিল্প ছাড়া কোনো শিল্প ছিল না বললেই চলে। এখন জনগণের প্রয়োজন মেটানোর প্রায় সব শিল্পসামগ্রীই বাংলাদেশে উৎপাদিত হচ্ছে। গার্মেন্টস পণ্য সহ অনেক শিল্পসামগ্রী যেমন, ঔষধ, টিন, কাঁচ, সিরামিক, ছোট জাহাজ, চামড়াজাত দ্রব্য, প্লাস্টিক ইত্যাদি বহির্বিশ্বে রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে। তথ্য ও যোগযোগ প্রযুক্তি এবং সেবাখাতেও বাংলাদেশের অগ্রগতি উল্লেখযোগ্য। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের যে-আত্মনির্ভরশীলতা, যে-জয়যাত্রা আজ আমরা দেখছি তাঁর বীজটি বপন করেছিলেন বাঙালি জাতির সর্বকালের মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি বাঙালিকে মুক্তির ঠিকানা দিয়েছেন, তাই তিনি বাঙালির জন্য অবিনশ্বর, অমর।

উপসংহার
বঙ্গবন্ধু আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য; তিনি আমাদের অতীত, বর্তমান ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের বাংলাদেশ। সেই উজ্জ্বলতার আলোকসম্পাতে আলোকিত হবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন এই আমাদের প্রত্যাশা হওয়া উচিত। বাংলাদেশের সামনে সোনালি ভবিষ্যৎ হাতছানি দিচ্ছে। একটি দেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধিতে তরুণ ও যুবসমাজের ভূমিকা অপরিসীম। শিক্ষা যেমন জাতির মেরুদন্ড তেমনি তরুণরা একটি দেশের মেরুদন্ড। তাঁরাই দেশের উন্নয়নে অবদান রাখে, দেশকে প্রত্যাশিত গন্তব্যে পৌঁছে দিতে পারে। সে বিবেচনায় বিশ্বের অন্য যে কোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশের সম্ভাবনা এখন অনেক বেশি। বর্তমান সরকার ঘোষিত ‘ভিশন-২০২১’ ও ‘ভিশন-২০৪১’ এবং জাতিসংঘ ঘোষিত ‘সাসটেইনেবল ডেভলপমেন্ট গোলস ২০৩০’ বা ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০’ বাস্তবায়নের অন্যতম প্রধান শক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে দেশের সম্ভাবনাময় তরুণ এবং যুবসমাজ। দেশের ত্যাগ, তিতিক্ষা, অতীত ও ইতিহাসকে শক্তি হিসাবে ধারণ করে সকল ভেদাভেদ ভুলে বিদ্যমান প্রতিকূলতা নিরসন করা ও ক্রমাগত উন্নয়নে ভূমিকা রাখা হবে আমাদের নতুন বিজয়, আমাদের স্বাধীনতার মর্যাদা আর আমাদের দেশের মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর ভিত্তি।
--------------------------------- ------- ------------------------------


তথ্যসূত্রঃ
  •  ফিচার ২০২০, মুজিবশতবর্ষ,তথ্যঅধিদফতর, গণপ্রজাতন্ত্রীবাংলাদেশসরকার।
  •  কারাগারের রোজনামচা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান; ১৯৬৬ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর জেল-জীবনচিত্র, বাংলাএকাডেমি।
  •  শেখ মুজিবুর রহমান, অসমাপ্ত আত্মজীবনী, দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড, ঢাকা, ২০১২।
  •  ড. আবুলকাশেম (সংকলনওসম্পাদনা), বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রাম ও আওয়ামীলীগ, ঐতিহাসিক দলিল, জাতীয় গ্রন্থ প্রকাশন, ঢাকা, ২০০১।
  •  আমার কিছু কথা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ইতিহাস প্রকাশন।
  •  Choudhury, G. W. (1972). Bangladesh: Why it happened. International Affairs (Royal Institute of International Affairs 1944), 48(2), 242-249.


বিঃ দ্রঃ উক্ত লেখার সম্পূর্ণ দায়ভার লেখকের