চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল বিশ্ববিদ্যালয় এবং কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের (কেজিএফ) যৌথ গবেষণা প্রকল্প "Increasing livestock production in the Hills through better husbandry, health services and improving market access through value and supply chain management" এর একটি Inception Workshop ১৩ মে ২০১৭ ইং সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ প্রধান অতিথি এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব এবং কেজিএফ এর টেকনিক্যাল এডভাইজরি কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. জহুরুল করিম বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন কেজিএফ-এর পরিচালক (মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ) ড. কাজী এম কমরউদ্দিন, ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডিন প্রফেসর মো. আব্দুল হালিম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ওয়ান হেলথ ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর ড. এএমএএম জুনায়েদ সিদ্দিকী। বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক্স এন্ড এনিম্যাল ব্রিডিং বিভাগের প্রফেসর ও প্রকল্পের কো-অর্ডিনেটর ড. মো. কবিরুল ইসলাম খান কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন।
কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপাচার্য বলেন, পাহাড়ী এলাকার মানুষের জীবন মান উন্নয়নে কৃষিভিত্তিক বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ব্যাপক প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানাবিদ কারণে পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর চিরাচরিত চাষাবাদ ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। ফলে কাংখিত উৎপাদন থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছে। উক্ত প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক উন্নয়ন সাধিত হবে। তিনি উল্লেখ করেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের মৌসুমী ফল যেমন- আম, আনারস, কলা, কাঁঠাল ও নানা সবজি উৎপাদন করে কৃষকরা যথাযথ মূল্য পাচ্ছেন না। এ জন্য কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরী।
সাবেক সচিব এবং কেজিএফ এর টেকনিক্যাল এডভাইজরি কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. জহুরুল করিম বলেন, কেজিএফ প্রাথমিক ভাবে এ প্রকল্পের জন্য ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে। গবেষণা কাজের মাধ্যমে যৌক্তিক কারণ দেখাতে পারলে বরাদ্দের পরিমাণ বাড়ানো হবে। তিনি বলেন, এ প্রকল্প আর্থসামাজিক উন্নয়নে সাহায্য করবে। তবে কৃষি গবেষণার ক্ষেত্রে একটি বিষয় আরেকটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। এ জন্য তিনি কৃষিভিত্তিক অন্যান্য বিষয়ের গবেষণার উপরও জোর দেন। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয় উদ্যোগ নিলে পাবর্ত্য চট্টগ্রাম এলাকায় আরও গবেষণা প্রকল্প পরিচালনার করা যাবে বলে তিনি মত ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, এ প্রকল্পটি একটি যৌথ গবেষণা প্রকল্প। উক্ত প্রকল্পটি পরিচালনায় নেতৃত্ব দেবে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় এবং সহযোগিতা করবে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিএলআরআই), বিশ্ববিদ্যালয়ের পোল্ট্রি রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং সেন্টার (পিআরটিসি) এবং ইনটিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (আইডিএফ)। এ প্রকল্পটি জেনেটিক্স এন্ড এনিম্যাল ব্রিডিং বিভাগের প্রফেসর ড. মো. কবিরুল ইসলাম খান-এর কোঅর্ডিনেশনে কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন (কেজিএফ) এর অর্থায়নে চট্টগ্রামের পাবর্ত্য জেলা বান্দরবানের সদর ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা এবং খাগড়াছড়ি জেলার সদর ও পানছড়ি উপজেলায় পরিচালিত হবে। এ প্রকল্পের আওতায় পাহাড়ী এলাকায় ছাগল, ভেড়া ও মুরগি পালন করা হবে। এতে পাহাড়ী এলাকার খামারিদের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ঘটবে। এর পাশাপাশি গবাদিপশু ও হাঁসমুরগিসহ বিভিন্ন মূল্যবান পণ্য যেমন দুধ, ডিম, মাংস উৎপাদন এবং উন্নত পদ্ধতিতে বাজারজাত পদ্ধতির উদ্ভাবন করা হবে।
কর্মশালায় এ বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন এনজিও সংস্থার প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন।